আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার আগেই মুখ খুললেন তিনি ওবামাকে নিয়ে ছুড়লেন কটাক্ষের ঝড়। বললেন, “আমি আটটা যুদ্ধ থামিয়েছি, অথচ ওবামা কিছুই না করেও নোবেল পেয়েছে!” ঠিক কী বললেন ট্রাম্প? কেন এত ক্ষোভ? আর নোবেলের দৌড়ে এবার আসলে কে এগিয়ে?
নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার দৌড়ে নিজের নাম না ওঠায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি দাবি করেছেন, গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে আটটি যুদ্ধ বন্ধ করার কৃতিত্ব তাঁরই। তবুও ওবামা কিছুই না করেও নোবেল পেয়েছেন, এই বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না তিনি। ট্রাম্প বলেন, “ওবামা দেশকে ধ্বংস করা ছাড়া কিছুই করেননি, তবুও তিনি নোবেল পেলেন।” ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার মাত্র আট মাস পরই শান্তির নোবেল পেয়েছিলেন ওবামা। সেই ঘটনাকেই এখন নতুন করে তুললেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন ১৭ জনকে নিয়ে দল ছাড়লেন বিজেপির দাপুটে নেতা: বিরোধ আটকাতে পারবে কি বিজেপি নেতৃত্ব?
তিনি আরও বলেন, “ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ থামিয়েছি, সার্বিয়া-কসোভো, ইজিপ্ট-ইথিওপিয়া সব জায়গায় শান্তি আনতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি নোবেল পাব না। কারণ নোবেল কমিটি রাজনীতিকে শান্তির চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়।”
ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “আমি যাই করি না কেন, মানুষ জানে আমি কী করেছি। সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।” এই বক্তব্যের পর থেকেই আলোচনায় ফেরেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকেই নিজেকে ‘শান্তির দূত’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন তিনি। এমনকি অসলোর Peace Research Institute-এর ওপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টাও করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
তবে ওই সংস্থার ডিরেক্টর নিনা গ্রেগর জানিয়েছেন, ট্রাম্প গাজায় শান্তি ফেরানোর প্রচেষ্টা করেছেন ঠিকই, কিন্তু সেই উদ্যোগ কতটা কার্যকরী হবে, তা সময় বলবে। তবে অবশেষে ঘোষিত হলো ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের নাম
এবং ট্রাম্পের কপালে শিকে ছোঁয়নি! নোবেল শান্তি পুরস্কার গিয়েছে ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো-র হাতে! এই সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছে হোয়াইট হাউস। সরকারি বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে , “নোবেল কমিটি শান্তির চেয়ে রাজনীতিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এটা সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত।”
রায়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র বলেছেন, “নোবেল কমিটি আরও একবার প্রমাণ করল যে, শান্তির আদর্শ এখন রাজনৈতিক রঙে রাঙানো।” অন্যদিকে, নরওয়ের অসলো থেকে নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান জর্গেন ওয়াটনে ফ্রিডনেস ঘোষণা করেন, “মারিয়া কোরিনা মাচাদো লাতিন আমেরিকার সাহসী আন্দোলনের প্রতীক। অন্ধকার সময়েও তিনি ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্রের শিখা জ্বালিয়ে রেখেছেন।” কমিটি তাঁকে আখ্যা দিয়েছে “আলোর পথযাত্রী” হিসেবে।
অন্যদিকে, নোবেল হারিয়ে নীরব ট্রাম্প। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁর এই তীব্র প্রতিক্রিয়া কি ভবিষ্যতে নোবেল কমিটি ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কে ছায়া ফেলবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরছে রাজনৈতিক মহলের মনে। সময়ই দেবে উত্তর, শান্তির নোবেল কি সত্যিই শান্তি রক্ষা করল, নাকি আরও একবার জ্বালিয়ে দিল নতুন বিতর্কের আগুন।
-জ্যোতি সরকার