সর্বশেষ সংবাদ
পুজোর মুখেই দূর্যোগ: বছরের রেকর্ড বৃষ্টিতে জলের তলায় কলকাতা

পুজোর মুখেই দূর্যোগ: বছরের রেকর্ড বৃষ্টিতে জলের তলায় কলকাতা

কলকাতায় এবছরের রেকর্ড বৃষ্টি। পুজোয় আর হাতেগোনা মাত্র কয়েকটা দিন, তার আগেই এমন দূর্যোগ আশা করেননি কলকাতাবাসী। সোমবার গভীর রাত থেকে শুরু হওয়া টানা ভারী বৃষ্টিতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকা। প্রায় জলমগ্ন শহরের একাধিক অংশ।

কলকাতা পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ কলকাতায়। গড়িয়া এলাকায় সর্বোচ্চ ৩৩২ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। যোধপুর পার্কে ২৮৫ মিমি, কালিঘাটে ২৮০ মিমি, তপসিয়ায় ২৭৫ মিমি ও বালিগঞ্জে ২৬৪ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত গঙ্গার জোয়ারের জন্য লকগেট বন্ধ রাখা হয়েছিল, ফলে জল নামতে পারেনি।

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গের আরও কয়েকটি জেলায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ২৫ সেপ্টেম্বরের পর ফের একটি নতুন নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে।

এদিকে, অতিবৃষ্টির ফলে ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত। শিয়ালদহ-দক্ষিণ শাখা ও চক্ররেল পুরোপুরি বন্ধ। শিয়ালদহ-জঙ্গিপুর ও হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস বাতিল হয়েছে। মেট্রোর মাঝের অংশে জল ঢুকে যাওয়ায় মহানায়ক উত্তমকুমার থেকে রবীন্দ্র সরোবর পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ। জলমগ্ন বিধাননগর, সল্টলেক, নিউটাউনের বেশীরভাগ। ফলে ভোগান্তির স্বীকার অফিস যাত্রীরা।

পুজোর প্রস্তুতিতেও বাধা পড়েছে। অতিবৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত বহু পুজোমণ্ডপ। শ্রীভূমি, টালা প্রত্যয়, বেহালা সহ আরও একাধিক প্যান্ডেলে কোথাও জল ঢুকে পড়েছে, কোথাও প্যান্ডেলের সরঞ্জাম ভেসে গেছে আবার কোথাও স্টল ভেঙে পড়েছে।

রাতভর টানা বৃষ্টির ফলে শহরের বহু রাস্তা, অলিগলি ও আবাসিক এলাকাগুলি হাঁটু জল অথবা তার চেয়েও বেশি। তার পাশাপাশি নিচু এলাকায় একতলা বাড়ির ভেতর পর্যন্ত জল ঢুকে পড়েছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৭ জনের, বলে খবর।

পুরসভার মেয়র পরিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ জানিয়েছেন, " বছরের এই সময়ে এত ভারী বৃষ্টি কলকাতা আগে দেখেনি। নিকাশি বিভাগ রাত থেকেই কাজ করছে, কিন্তু কিছু পাম্পিং স্টেশন বন্ধ থাকায় সমস্যা হচ্ছে। শহর স্বাভাবিক হতে অন্তত ১০–১২ ঘণ্টা লাগবে।" দুপুর ১২টার পর ফের গঙ্গায় জোয়ারের কারণে লকগেট বন্ধ রাখা হবে, যা জল নামার কাজে আরও বাধা দিতে পারে।

এই অবস্থায় সাহায্য এগিয়ে এসেছে অনেক স্বেচ্ছাসেবী দল। সেইসঙ্গে অনেকে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেওয়া, গাড়ি ঠেলে সরানো ইত্যাদি কাজ করছেন। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে। তবে ফের বৃষ্টি শুরু হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

                                                                                                - দিশা দাস

পরবর্তী খবর