কর্মব্যস্ত সকালে হঠাৎ এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হল, যার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না। এক মুহূর্তে থমকে দাঁড়াল হাজারো মানুষের পথ চলা। কিন্তু কেন এমন হল? কী ঘটেছিল হঠাৎ করে?
আসলে বুধবার সকাল ১০টা ৩৪ মিনিট নাগাদ হঠাৎ করেই থেমে যায় কলকাতার ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রো, অর্থাৎ গ্রিন লাইনের মেট্রো চলাচল। সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত সমস্ত পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। তার আগেই সকাল থেকে যাত্রীরা অভিযোগ করছিলেন, মেট্রো ৩ থেকে ৪ মিনিট দেরি করে আসছিল। কিন্তু একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়া যে আরও বড় সমস্যার ইঙ্গিত দেবে, তা কেউ ভাবেননি।
এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কোনও রেক ছাড়েনি। যাত্রীরা দাঁড়িয়ে পড়েন প্ল্যাটফর্মে, একের পর এক স্টেশনে ভিড় জমতে থাকে। অভিযোগ ওঠে, কোথাও কোনও ঘোষণা করা হয়নি। অনেক যাত্রী কার্ড পাঞ্চ বা কিউআর কোড স্ক্যান করে ভিতরে ঢোকার পরে জানতে পারেন মেট্রো চলছে না। এই পরিস্থিতিতে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন টানাপড়েনের মাঝেই জন্মদিনে মোদীকে শুভেচ্ছা ট্রাম্পের, বদলাচ্ছে সমীকরণ?
মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানায়, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বাধ্য হয়ে পরিষেবা বন্ধ রাখতে হয়েছিল। সমস্যার সমাধান করতে না পারা পর্যন্ত আপ ও ডাউন লাইনের চলাচল স্থগিত রাখা হয়। পরে ধীরে ধীরে পরিষেবা চালু করা হয়।
সকাল ১১টা ৪৬ মিনিট নাগাদ হাওড়া ময়দান থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত আংশিকভাবে মেট্রো চালানো হয়। তবে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত পৌঁছাতে আরও সময় লাগে। অবশেষে দুপুর ১টা ১ মিনিটে ঘোষণা করা হয়, সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত পুরো রুটে মেট্রো চালু হয়েছে। যদিও যাত্রীদের দাবি, দুপুরের পরও পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।
এমন ঘটনায় দিনের ব্যস্ত সময়ে ব্যাপক সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। কর্মস্থলে পৌঁছতে দেরি হয়, বাধ্য হয়ে অনেকেই সড়কপথে যাতায়াত শুরু করেন। চন্দননগরের এক মহিলা যাত্রী বলেন, ‘‘যেখানে রোজ পাঁচ–সাত মিনিটে চলে যাই, আজ সেখানে কতক্ষণ লাগবে জানি না।’’ আবার কেউ কেউ রসিকতার ছলে বলেন, ‘‘উত্তর–দক্ষিণ ব্লু লাইনের রোগ এবার গ্রিন লাইনে ঢুকে পড়েছে।’’
দিনের এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মেট্রোর এই বিভ্রাট প্রমাণ করে দিল, প্রযুক্তিগত সামান্য গোলযোগ কেমন করে কয়েক হাজার যাত্রীর জীবনকে এক মুহূর্তে ব্যাহত করে দিতে পারে।
-জ্যোতি সরকার